INLEPT

INLEPT
(Institute of Learning and Promoting Tolerance)

অসহিষ্ণুতার বীজ


লেখকঃ গোলাম রাউফুন
শিক্ষার্থী, স্থানীয় সরকার ও নগর উন্নয়ন বিভাগ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়


সহনশীলতা মানুষের একটি অন্যতম গুন। এটি সমাজের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তবে দিন যত যাচ্ছে সহনশীলতার পরিমানও তত কমছে। ফলে অসহনশীলতা বাড়ছে। এখনকার সময়টাকে প্রতিযগিতার যুগ ও বলা যায়। সবাই একে অন্যকে টপকে এগিয়ে যাওয়ার রেওয়াজ অনুসরণ করছে। কোন কিছুতে অন্য কেউ যদি টপকে এগিয়ে যায় তো যেন পিছিয়ে পরা ব্যাক্তির মাথা কাটা যায়। বিশেষ করে পড়া-শোনার ক্ষেত্রে এর প্রভাব ব্যাপক। কারও কারও সহনশীলতার মাত্রা এত কম যে কেউ নম্বরে এগিয়ে গেলে বা পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হলে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। আর এর পিছনে কাজ করে বাবা মায়ের প্রতি অভিমান,সমাজের সমালোচনা, বিদ্রূপ, তামাশা ইত্যাদি।

কোনো শিশু জন্মানোর পরপরই পিতা মাতা,অাত্বীয় স্বজনরা এই অসহনশীলতার বীজ শিশুদের মধ্যে বপন করে দেয়। যেমন ধরুন এর সাথে খেলবে না,ও বস্তিতে থাকে; অন্যকে তোমার থেকে এগিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না; অন্য ধর্মের কারও বাসায় যাবে না অথবা খাবে না ইত্যাদি। যদিও এসব উক্তির পেছনে বাবা মায়ের ভালবাসা ও সচেতনতা উদ্দেশ্য হিসেবে কাজ করে কিন্তু তবুও শৈশবকাল হতেই ঐ শিশুর মধ্যে অসহনশীলতার বীজ ধীরে ধীরে বেড়ে উঠতে থাকে। আর এক সময় এটি বয়সের সাথে সাথে আরও বড় আকারে সমাজে প্রকাশ পেতে থাকে। আর এরই ফল হল বিভিন্ন ধর্মের লোকদের মধ্যে বৈরী সম্পর্ক, ধনী গরীবের বৈষম্য, রাজনৈতিক কন্দোল, প্রতিষ্ঠানের উচ্চ ও নিম্ন পর্যায়ের চাকুরীজীবীদের মধ্যে নেতিবাচক সম্পর্ক ইত্যাদি। এই অসহনশীলতার একটি বড় উদাহরণ হল আন্তর্জাতিক পর্যায়ের যুদ্ধ। তবে আমরা এই দোষ পিতা মাতা বা আত্বীয়কে দিতে পারি না। কারন তারাও একই ধারাবাহিকতা শৈশব থেকে বয়ে বেড়াচ্ছে।
আর তাই আমাদের এই অসহনশীলতার ধারাবাহিকতা বন্ধ করতে হলে সমাজের অভিভাবকদের ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। এর শুরু করতে হবে সমাজের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম একক, পরিবার হতে। কারন একটি শিশু তখনই সহনশীল হবে যখন সে তার কাছের মানুষদের সহনশীল হিসেবে দেখবে এবং সেখান থেকেই শিখবে।
আর ধীরে ধীরে সহনশীলতার বীজ বয়সের সাথে সাথে বাড়তে থাকবে এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে। এবং এর ফল সারা বিশ্ব ব্যাপী ছড়িয়ে পরবে।

No comments

Theme images by richcano. Powered by Blogger.