INLEPT

INLEPT
(Institute of Learning and Promoting Tolerance)

ধর্ষক, তোরা মানুষ হ


ছবিঃ সংগৃহিত

লেখিকা
মনিরা নুসরাত ফারহা
শিক্ষার্থী, পপুলেশন সায়েন্স বিভাগ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়


গত ৫ জানুয়ারি ২০১৯ সন্ধ্যায় রাজধানীর গেন্ডারিয়ার দীননাথ সেন রোডে বাড়ির পাশের চারতলা একটি ভবনের সামনে আয়েশার রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন প্রতিবেশীরা। আয়েশাকে খিচুড়ি খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে চারতলা বাসার মালিক নাহিদ(৪৫)  নিজের ফ্ল্যাট নিয়ে যান এবং সেখানেই তাকে ধর্ষণ করা হয়। সন্ধ্যার দিকে ফ্ল্যাটের খোলা বারান্দা থেকে আয়েশাকে নিচে ফেলে দেন নাহিদ।

মা-বাবা ও তিন বোনের সঙ্গে এক বস্তিতে থাকত শিশু আয়েশা। প্রতি সকালে আয়েশার বাবা-মা কাজে যান। ঘটনার দিন বিকেলে খেলতে বের হয় আয়েশা। সন্ধ্যার দিকে তার রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। অায়েশার নাকমুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে মেয়েটি মারা যায়।
মেয়েটি মারা যাওয়ার পর এর প্রতিবাদে অায়েশার মা মানব বন্ধন করেন। কিন্তু অাশ্চর্য হলেও সত্য যে ঐ মানব বন্ধনের লোক সংখ্যা ছিলো মাত্র চারজন, অায়েশার মা এবং ছোট তিনভাইবোন।
সন্তানের হত্যার বিচারের দাবিতে শিশু সন্তানদের নিয়ে মানব বন্ধনে দাঁড়ান মা রাজিয়া। আহাজারি করে বলেন, "কে আছো আমার পাশে। দেখ আমার মা (ব্যানারের শিশু আয়েশার ছবি দেখিয়ে) সবার দিকে তাকিয়ে হাসছে। কোথায় আমার সরকার। আমারে সাহায্য করতে বলো"।আমি আমার মায়ের ধর্ষণকারীর বিচার চাই, ফাঁসি চাই। আসামির হয়ে সবাই আমারে হুমকি দেয়, টাকা নিয়া পুলিশও আসামির পক্ষে কথা কয়। আমার কেউ নাই।


এভাবে অার কত শিশু ধর্ষিত হবে? যে শিশু থেকে কৈশোরে পদার্পণ করার অাগেই তার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দিলো মানুষ নামের একটা অমানুষ। এরকম অমানুষ অামাদের অাশেপাশেই বসবাস করে।অামরা বলি " অাজকের শিশু অাগামী দিনের ভবিষ্যৎ "
এখন প্রশ্নটা হলো, অাজকের ধর্ষিত শিশু কি অাগামী দিনের ভবিষ্যৎ?

অনেকের মতেই উওর টা "না" হবে। সম্প্রতি অামাদের চারপাশে ধর্ষিত শিশুর সংখ্যা বেড়েই চলছে,৮মাস বয়সের শিশুও ধর্ষন হয়,অামাদের ভবিষ্যৎ পুরোপুরি নষ্টের পথে।

২০১৬ সালে ধর্ষনের সংখ্যা ছিল ৬৫৯ জন। এবং ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ৪৭ নারী এবং ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছেন ১১ নারী।
২০১৭ সালে শিশু নারীসহ ৮১৮ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।

মূলত সামাজিক মূল্যবোধ, প্রকৃত শিক্ষার অভাব এবং নিচু মানসিকতার কারণেই এর প্রভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অনেক সমাজবিদ মনে করেন। অমানুষের বেড়াজাল থেকে বের হয়ে যেদিন মানুষের খাতায় নাম লিখাতে পারবে কতিপয় মানুষ নামক প্রানী কেবল সেদিনই এই শিশু সহ সব ধরনের ধর্ষন বন্ধ করা সম্ভব।

আমাদের দেশে প্রতিদিনই ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার শিকার হচ্ছে ছোট শিশুরাও। গ্রাম বা শহরে রাস্তাঘাটে অথবা ঘরে কখনো আবার বাসে কিংবা লঞ্চে কোথাও নিরাপদ নয় আমাদের নারীরা। ঘরে ঢুকে বাবা-মা কিংবা স্বামীকে বেঁধে রেখে ধর্ষণ, রাস্তায় ভাইকে বেঁধে রেখে বোনকে ধর্ষণ, বেড়াতে গেলে ফুঁসলিয়ে বা চকলেট দিয়ে বাচ্চাকে ধর্ষণ করা- এসব চিত্র যেন বেড়েই চলেছে সমাজে।
বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১৮৬০ আইনের ৩৭৬ ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ধর্ষণের অপরাধ করে তবে সে ব্যক্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে অথবা দশ বছর পর্যন্ত যেকোন মেয়াদে সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং জরিমানা দণ্ডেও দণ্ডিত হবে।

১৪ বা ১০বছর একটা ধর্ষক জেলখানায় কাটিয়ে ঠিকই বের হয়ে মাথা উচু করে বুক ফুলিয়ে ঘোরে বেড়ায় কিন্ত মেয়েটি কি মাথা উচু করে বাচতেঁ পারে? 
এর শেষ কোথায়?

3 comments:

  1. আমি স্বাধীনতার বা মুক্তি যোদ্ধের পক্ষের লোকদের বলছি না।আমি সেই নির্ভীক যোদ্ধাদের বলছি যারা একটা স্বাধীন দেশের স্বপ্ন নিয়ে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল । যারা নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও অস্ত্র হাতে মানুষের মুক্তির জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল । যারা স্বাধীনতার রক্তিম সূর্য ছিনিয়ে এনেছিল । যাদের জন্য আজ আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা । তবে আজও কেনো এই স্বাধীন দেশে হায়ানার থাবা পড়ে?কেনো আজও আমাদের মা বোন স্বাধীনতা পাই নাই ?কেনো ই বা তারা স্বাধীন ভাবে চলতে পারে না? কেনো তারা আজও নির্যাতিতা ? কি কারণে আজ আমার দেশে মা বোন ধর্ষিত হয়?? এই লজ্জা কার??? স্বার্থের কাছে আজ আমাদের মানবতা,বিবেক, আত্মসম্মানবোধ কি বিসর্জন দিতে হবে??? আর এক বার বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি, আপনাদের বিবেককে জাগ্রত করুন । একবার ,শুধু একবার ধর্ষণের বিরুদ্ধে ''না" বলুন । ধর্ষকের শাস্তি চাই, দিতে হবে ।

    ReplyDelete
  2. Dst jotil likshos...ar shes kothai

    ReplyDelete

Theme images by richcano. Powered by Blogger.