চকবাজার ট্রাজেডিঃ লোভ সামলান নয়তো নিজেকে সামলাতে পারবেন না
ছবিঃ বিবিসি
লেখিকা
মনিরা নুসরাত ফারহা
শিক্ষার্থী, পপুলেশন
সায়েন্স বিভাগ,
জাতীয় কবি কাজী নজরুল
ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়
তারিখটা ছিলো ২০ ফেব্রুয়ারী।
স্বপ্নপুরী সেই শহরটাতে তখন ঘড়ির
কাটায় রাত ১০টা বেজে ৩২মিনিট। হঠাৎ বিস্ফোরণ! কিছু না বুঝে চোখ তুলে
তাকাতেই চারদিকে আগুনের লেলিহান। স্বপ্নপুরী শহরের বিদ্যুতের আলোতে
আলোকময় রাতটা ক্ষনিকেই আলো পাল্টে হয়ে গেলো আগুনের নগরী। মারা গেলো প্রায় ৭৮ জনের
মত।
আহত অর্ধশতাধিক এবং খোঁজ নেই অনেকের।
ফ্যাক্টরির লোভী মালিকগুলোও এই আগুন থেকে রক্ষা পায়নাই। তাদের লোভের কারনে আগুনের
কাছে বলিদান হয়েছে নিজের সহ পুরো পরিবারের প্রাণ, ছোট ছোট শিশুদের প্রাণ।
(ঘটনাস্হলে ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল
ডিফেন্সের সাটানো বোর্ডে তথ্য দেয়া হয়েছে)
এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে হতাহত হওয়ার
ঘটনার জন্য বেশির ভাগ দায়ী অবৈধ কারখানার মালিক। কেননা তাদের লোভের জন্য জন্য
ফ্যাক্টরি তৈরি করে আন্ডারগ্রাউন্ডে কেমিক্যাল রেখে দেওয়া হয় অথচ যেখানে কোনো
ফ্যাক্টরি করার আইনই বলবৎ নেই। সিলিন্ডার গ্যাসকে মূলত এলপিজি গ্যাস বলা হয়। এগুলো
ঘনবসতি পূর্ণ এলাকায় রাখার ঝুঁকি অনেক বেশী। অথচ আইন না মেনে এলপিজি গ্যাসও
ব্যবহার করা হয়েছে।
জানা যায়, শহরের আবাসিক ভবনে অনুমতি
না থাকা সত্ত্বেও বিপজ্জনক রাসায়নিক ও বিস্ফোরক দ্রব্য সংরক্ষণ করা চিহ্নিত ৩৬০টি
কারখানা রয়েছে। তারপরও সেগুলা বন্ধ হচ্ছেনা।
উল্লেক্ষ্য, এর আগে ২০১০ সালে শহরের
নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডে ১২৪ জন প্রাণ হারান, সেটা ছিল দেশের ইতিহাসে মর্মান্তিক
দুর্ঘটনাগুলোর অন্যতম। তবে ওই দুর্ঘটনার পর কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের তোড়জোড়ের
চেয়ে সেখানে বেঁচে যাওয়া তিনটি মেয়ের বিবাহ উৎসব প্রাধান্য পেয়েছিল বেশি।
বাবা-মা হারানো এতিম মেয়েদের বিয়ে
দিয়ে পুনর্বাসনের প্রয়োজন ছিল বটে, তবে খুব বেশি দরকার ছিল পুরান ঢাকা থেকে
রাসায়নিক পদার্থের গুদাম ও কারখানাগুলো সরিয়ে নেওয়া কিন্তু সেটা করা হয়নি।
যদি আবাসিক এলাকা থেকে রাসায়নিক
পদার্থের গুদাম ও কারখানা সরানো হতো তাহলে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতোনা।
কিছু
অসাধু লোভী মালিকের জন্যে স্বপ্নপুরীটা নরকে পরিনত হয়েছে। একদিকে কারখানাগুলা
নিয়মিত পরিদর্শন করা হচ্ছেনা অন্য দিকে কিছু অবৈধ কারখানার মালিক তাদের ফ্যাক্টরি
বাড়িয়েই চলেছেন। ভবন মালিকেরা যদি ভাড়া না দেন তাহলে সেখানে কেমিক্যালের গুদাম হতে
পারবে না। আর অবৈধভাবে যদি গুদাম হয়, তা বন্ধ করে দেওয়ার ক্ষমতা সরকারি
কর্মকর্তাদের আছে। বাড়ির মালিকদের মুনাফার লোভ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের
কর্তব্যে অবহেলা এই জাতীয় দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।
স্বপ্নপুরীকে স্বপ্নের মতো করতে অবৈধ
কারখানার মালিককে রুখতে হবে। আর তখনই স্বপ্নপুরি স্বপ্নের মতো হবে।
তথ্যসূত্রঃ
১। জাগরণীয়া ডেস্ক (২১ ফেব্রুয়ারি
২০১৯) চকবাজারে আগুন: দীর্ঘ হচ্ছে মৃতের সারি, জাগরণীয়া <ইন্টারনেট>
২। নিজস্ব প্রতিবেদক (08 March 2019)
চকবাজার ট্রাজেডি: মালিক-ভাড়াটিয়া দুপক্ষই অভিযুক্ত, bangla.24livenewspaper
<ইন্টারনেট>
স্বপ্নপুরীকে স্বপ্নের মতো করতে অবৈধ কারখানার মালিককে রুখতে হবে। আর তখনই স্বপ্নপুরি স্বপ্নের মতো হবে।
ReplyDeleteবেস্ট ছিলো💘
দোয়া চাই ভবিষ্যতে অারো ভালো কিছু দেয়ার জন্য।
DeleteThis comment has been removed by the author.
Deleteএসব অবৈধ কারখানা গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করছি।
ReplyDeleteকারখানার মালিক এবং জনগনের সচেতনতাই পারে এসব বন্ধ করতে
ReplyDelete